Saturday, 25 November 2017

বরিস্কা দ্যা ইন্ডিগো বয় ফ্রম মার্স

পৃথিবীতে যুগে যুগে কত যে আজগুবি আর বিচিত্র ঘটনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার কোনো হিসেব নেই। সময়ে অসময়ে নানা ধর্মগুরুদের ভবিষ্যত বাণী দিয়ে মানুষকে করেছে বিভ্ৰান্ত তার কোনো শেষ নেই। এরকম হাজারো ভবিষ্যত বাণী বাবা ভাঙ্গা থেকে নস্ত্রাদামুস কিংবা মায়া ক্যালেন্ডার সহ অনেক কিছুর কথা নেট ঘাটলেই চলে আসে সামনে। ইদানিং এরকমই একটি বিস্ময় জাগানিয়া ঘটনা সম্প্রীতি নেট দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছে আর তা হচ্ছে  ২১ বছরের রাশিয়ান এক জাতিস্বর বালক বরিস্কা কিপ্রিয়ানোভিচ। জাতিস্বর রাশিয়ান এই বালক নিজেকে দাবি করছে সে মঙ্গল গ্রহের বাসিন্দা। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বরিস্কার সমন্ধে।

২০০৮ সালে ''বরিস্কা দ্যা ইন্ডিগো বয় ফ্রম মার্স '' এক ডকুমেন্টারির মাধ্যমে তার ঘটনা প্রথম জনসমক্ষে আসে। ছোটবেলা থেকেই সে মঙ্গলগ্রহে পূর্ব জন্মের কথা বলে আসছে। ১৯৯৬ সালে রাশিয়ার ভলগ্রোগ্রাড রিজিওনের ভ্লঝাই শহরে জন্ম নেওয়া বরিস্কা ছোট থেকেই আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের থেকে সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম ছিল। পেশায় চিকিৎসক তার মা কিপ্রিনিয়াওভিচ তার ছেলের জন্মগ্রহণের সময়কার ঘটনা সম্পর্কে বলেন ,"এ সব এত দ্রুত ঘটে গেল যে আমি কোন প্রসব যন্ত্রনাও পেলাম না। যখন নার্সরা শিশুটিকে আমাকে দেখালো, সে আমার দিকে পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। একজন শিশুরোগ-চিকিৎসক হিসাবে আমি জানি নবজাতক এভাবে কোনকিছুর দিকে একদৃষ্টিতে তাকাতে পারে না"। হসপিটাল থেকে বাড়ি আসার পর সে তার নবজাতকের বেশ কিছ অস্বাভাবিক জিনিষ লক্ষ্য করতে শুরু করলেন। মাত্র ১৫ দিন বয়স থেকেই সে তার মায়ের হাত শক্ত করে ধরতে পারে। সে সাধারণত কাঁদে না, এমনকি তার কোন রোগেও ধরে না। সে অন্যান্য শিশুদের মত বড় হতে থাকলেও মাত্র ৮মাস বয়সেই স্বাভাবিক মানুষের মত করে কথা বলা শিখে যায়। বরিস্কার বয়স যখন ২ বছরে তখন সে নীল ও বেগুনি রং-এ মিশ্রিত এমন সব অদ্ভুত ছবি আঁকতে শুর করে যা প্রথমত বিমূর্ত মনে হতো। সাইকোলজিস্টরা বললো শিশুটি খুব সম্ভবত তার আশে পাশে যাদেরকে দেখে এসব তাদেরই ছবি। বয়স৩ না পেরোতেই সে তার বাবা-মাকে মহাবিশ্বের গল্প বলা আরম্ভ করে। সে বলতে পারে সমস্ত গ্রহ এবং তাদের উপগ্রহের সংখ্যা ও নাম, গ্যালাক্সিদের সংখ্যা ও নাম। বাবা-মা বলে,"আমরা প্রথমত ভয় পেয়ে যাই, তবে বরিস্কার দেওয়া তথ্য সত্য কিনা তা যাচায়ের নিমিত্তে বাজার থেকে জোতির্বিদ্যার উপর বই কিনে আনি, এবং এতে দেখা যায় বরিস্কার দেওয়া তথ্য পুরোপুরি সঠিক"। ২০০৪ সালে বরিস্কা প্রথমবার রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের নজরে আসে।  রাশিয়ান একাডেমি অবসায়েন্সের ইন্সটিউট অব আর্থ ম্যাগেনটিসম এ্যান্ড রেডিও ওয়েভসের বিশেষজ্ঞরা শিশু বরিস্কার ওরা (প্যারানরমাল) ফটোগ্রাফ নেয়।এবং তারা তাকে অসম্ভব বুদ্ধিমত্তার অধিকারিহিসাবে দেখতে পায়। এ সম্পর্কে অধ্যাপক ভ্লাডিলাভ লিউগোভেন্কো বলেন, "একটি থিওরি আছে, যেটা অনুসারে মানুষের দুই ধরণের মেমরি আছে: ওয়ার্ক এবং রিমোট মেমরি। মানুষের ব্রেনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা হলো অভ্যন্তরীণভাবে এবং বাহ্যিকভাবে অর্জিত অভিজ্ঞতা, আবেগ এবং চিন্তাভাবনাগুলোকে মহাবিশ্বের একক তথ্য কেন্দ্রে জমা করে রাখা। শুধুমাত্র হাতেগোনা কয়েকজন মানুষই সেখান থেকে তথ্য গ্রহন করতে পারে। বরিস্কা তাদেরই একজন"।এ্যাস্ট্রোনমিতে প্রচুর নলেজ তার।
বরিস্কা মনে করতে পারে তার মঙ্গল-জীবনের অনেক কিছু। মঙ্গল গ্রহের প্রাণী সম্পর্কে সে বলেছে, শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য তারা কার্বন ডাই অক্সাইডের উপর নির্ভরশীল। উচ্চতায় তারা মানুষের চেয়ে অনেক লম্বা। মঙ্গলবাসী অমর বলে দাবি করে সে। তার কথায় ৩৫ বছর হয়ে গেলেই মঙ্গলবাসীদের বয়স আর বাড়ে না। বিজ্ঞান প্রযুক্তির দিক থেকেও মঙ্গলবাসীরা অনেক দূর এগিয়ে।বহুদিন আগে থেকেই তারা বিভিন্ন নক্ষত্র মন্ডলে এমনকি টাইম ট্রাভেল করতেও সক্ষম। বরিস্কা জানায় পূর্ব জন্মে নিজেও সে একজন মহাকাশচারী পাইলট ছিল। সেই সময়ে সে পৃথিবীতেও এসেছিলো। প্রাচীন মিসরীয় সভ্ভতার সাথেও নাকি মঙ্গলবাসীদের সুসম্পর্ক ছিল। তার মতে পৃথিবীতে জীবনের নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে যদি কোনোদিন গিজা পিরামিডের সামনে স্ফীংস মূর্তির তালা খোলা সম্ভব হয়। আর সেই তালা খোলার কৌশল স্ফীংসের একটি কানের নিচেই রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সে। মঙ্গল গ্রহের সেই সভ্যতার অস্ত্বিত্ব নেই। বরিস্কার কথা অনুযায়ী হাজার হাজার বছর আগে মঙ্গলবাসীদের নিজেদের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের ফলে এক সময়ের প্রাণ চঞ্চল মঙ্গলের এখন সেই অবস্থা। বিধ্বংসী সেই যুদ্ধ মুছে দিয়েছে পৃথিবী থেকে অনেক এগিয়ে থাকা এক সভ্যতার চিহ্ন। তাকে অনেকবারই অনেকের সামনেই দিতে হয়েছে সাক্ষাতকার। প্রজেক্ট ক্যামেলটও হাজির হয়েছে তার কাছে।
 বরিস্কার মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণও আছে। এ্যাস্ট্রোনমির গুরুদেব ষ্টিফেন হকিংসও বরিস্কার প্রতিভা বিশ্বাস করে । ইউনিভার্স নিয়ে বরিস্কার নলেজকে প্রশংসাও করেছে হকিংস। তিনি বলেন, " বরিস্কা মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছে নাকি পৃথিবীই তার একমাত্র আবাস সেটা বিষয় নয় বরং মহাবিশ্বের উপর বরিস্কার যে নলেজ রয়েছে সেটা আমার কল্পানার বাইরে"।

No comments:

Post a Comment