গ্রানুইলির চরিত্রে রূপদানকারী বেন উইসশো সম্পূর্ন চরিত্রটিকে তুলে ধরেছেন অসাধারন দক্ষতায়।বিশাল মাছের বাজার, প্রচুর মানুষ আর পোষাক আর অসাধারন সিনেমাটোগ্রাফি খুব সহজেই আঠারোশ শতাব্দীর ফ্রান্সকে ফুটিয়ে তুলেছেন টম টাইকার২০০৬ সালে মুক্তির পর এটি আয় করে নেয় ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
১৪৭ মিনিটের এই মুভিটির শুরুতে দেখি প্যারিসের এক মাছ বাজারের মধ্যে জন্ম নেয়া গ্রানুইলিকে তার মা অনাদরে ফেলে রেখেছিল জন্মের পরই মারা যাবার জন্য।কেননা পিতৃপরিচয় দেওয়ার মত কোনো কিছু ছিলোনা ওই মহিলা জেলের। ঘটনাচক্রে সেখানে মাছ কিনতে আসা এক পুলিশ কর্মকর্তা সদ্য ভুমিষ্ট গ্রানুইলের কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়।কিন্তু মাছের আড়তে জন্ম নেওয়া ছোট্ট গ্রানুইল না মরে ফাঁসির দড়িতে মরতে হয় তার মাকে। গ্রানুইলের ঠাঁয় হয় এতিমখানায়।আষ্টে গন্ধওয়ালা মাছের আড়তে জন্ম নেওয়া গ্রানুইল পায় গন্ধ শোকার এক বিশেষ ক্ষমতা।১৭ বছর এতিমখানায় থাকার পর তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এক চামড়ার কারখানায়।কঠোর পরিশ্রমে কেটে যাওয়া গ্রানুইল খুঁজে ফেরে সবকিছুর গন্ধ এমনকি জলের তলের গন্ধও সে বুঝে ফেলে এক নিমিষেই। ঘটনা চক্রে একদিন সে সময়কার প্যারিসের নামকরা পারফিউম ব্যাবসায়ী বালদিনির সাথে।বালদিনি তাকে সেই চামড়া ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে চড়া দামে কিনে নেয়। গ্রানুইল তার বর্তমান মনিবের কাছ থেকে সুগন্ধি বানানোর প্রক্রিয়া শেখার পর সে তৈরী করতে থাকে নানা প্রকারের পারফিউম আর অন্যদিকে বালদিনি উপার্জন করতে থাকে কাড়ি কাড়ি টাকা। একদিন সে পারি জমায় গ্রাসের উদ্দেশ্যে যেখানে তৈরী হয় পৃথিবীর বিখ্যাত সব সুগন্ধি। বিশাল সব ফুলের বাগান হাজারো শ্রমিকের শ্রমে তৈরী হচ্ছে সুগন্ধি সমূহ।সে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সুগন্ধি আবিষ্কার করবে। সুন্দর সুগন্ধি আবিষ্কারের নেশা তাকে পেয়ে বসে । একটার পর একটা চেষ্টা সে করে যেতে থাকে সে কিন্তু তার মনঃপুত হয়না কোন সুগন্ধি । একসময় সে আবিষ্কার করে নারীদেহের এক মোহনীয় সুগন্ধ।তার ধ্যান জ্ঞান হয়ে দাঁড়ায় সুন্দরী কুমারী নারীদেহ থেকে কিভাবে সেই সুগন্ধকে ধরে রাখবে। টাকার বিনিময়ে অনুমতিক্রমে এক নারীর শরীর থেকে সুগন্ধি তৈরী করতে চায় কিন্তু তাতে সেই নারী রাজি না হলে তাকে হত্যা করে এবং বিশেষ এক গাদের সাহায্যে শরীর থেকে চেঁছে নেয় শরীরের নির্যাস আর তৈরী করে সুগন্ধি। হয়ে উঠে এক সিরিয়াল কিলার। শহর জুড়ে শুধু কুমারী মেয়েরা নিখোঁজ হতে শুরু করলো এবং তাদের নগ্ন লাশ বিভিন্ন জায়গায় পরে থাকতে লাগলো। শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে , যারই ঘরে কুমারী মেয়ে আছে তার মাঝেই কোনপ্রকার স্বস্তি নেই । একের পর এক হত্যা , অনেকভাবে চেষ্টা করেও কোনো কুলকিনারা করে উঠতে পারছেনা।এদিকে শহরের প্রধান তার কুমারী মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে আছে।গ্রানুইল তার সেরাটা তৈরী করার শেষ পর্যায়ে আসে। তার আর প্রয়োজন একটি কুমারী মেয়ের এবং তার নজর পরে শহর প্রধানের সুন্দরী মেয়ের দিকে। কিন্তু শহর প্রধান তার মেয়েকে নিয়ে বহুদূরে চলে যায়। দূর থেকে গন্ধ শুকে গ্রানুইল ঠিকই হাজির হয় তাদের কাছে। শহর প্রধান নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনা তার একমাত্র মেয়েকে। গ্রানুইল যখন তৈরী করে ফেলে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পারফিউম ঠিক তখুনিই সে ধরা পরে যায় রক্ষীদের হাতে। হাজার হাজার জনতা তার প্রকাশ্য ক্রূশ বিদ্ধ করা দেখতে এসেছে আর গ্রানুইল তখন তার সেই নিজের কাছে লুকিয়ে রাখা পারফিউমের মুখ খুলে ফেলে। তারপর!!!
তারপর কি হলো জানতে চাইলে দেখতে পারেন পারফিউম: দ্যা স্টোরী অব আ মার্ডারার।
![]() |
ছোট্ট গ্রানুইলের গন্ধ শুকা |
No comments:
Post a Comment